অজানা জীবন বাহিনু, রহিনু আপন মনে, গোপন করিতে চাহিনু-- ধরা দিনু দুনয়নে। কী বলিতে পাছে কী বলি তাই দূরে ছিনু কেবলি, তুমি কেন এসে সহসা দেখে গেলে আঁখিকোণে কী আছে আমার মনে। গভীর তিমিরগহনে আছিনু নীরব বিরহে, হাসির তড়িৎ-দহনে লুকানো সে আর কি রহে। দিন কেটেছিল বিজনে ধেয়ানের ছবি সৃজনে, আনমনে যেই গেয়েছি শুনে গেছ সেইখনে কী আছে আমার মনে। প্রবেশিলে মোর নিভৃতে, দেখে নিলে মোরে কী ভাবে, যে দীপ জ্বেলেছি নিশীথে সে দীপ কি তুমি নিভাবে। ছিল ভরি মোর থালিকা, ছিঁড়িব কি সেই মালিকা। শরম দিবে কি তাহারে অকথিত নিবেদনে যা আছে আমার মনে।
আজ কি তপন তুমি যাবে অস্তাচলে না শুনে আমার মুখে একটিও গান। দাঁড়াও গো, বিদায়ের দুটি কথা বলে আজিকার দিন আমি করি অবসান। থামো ওই সমুদ্রের প্রান্তরেখা-'পরে, মুখে মোর রাখো তব একমাত্র আঁখি। দিবসের শেষ পলে নিমেষের তরে তুমি চেয়ে থাকো আর আমি চেয়ে থাকি। দুজনের আঁখি-'পরে সায়াহ্ন-আঁধার আঁখির পাতার মতো আসুক মুদিয়া, গভীর তিমিরস্নিগ্ধ শান্তির পাথার নিবায়ে ফেলুক আজি দুটি দীপ্ত হিয়া। শেষ গান সাঙ্গ করে থেমে গেছে পাখি, আমার এ গানখানি ছিল শুধু বাকি॥