উদয়ন, ১২ মার্চ, ১৯৪১, বিকেল বেলা


 

৫৪ (sudhakanto)


সুধাকান্ত

         বচনের রচনে অক্লান্ত--

              মুখে কথা নাহি বাধে,

         পসরা ভরিয়া রাখে বহুবিধ কুড়ানো সংবাদে,

         প্রত্যহ কন্ঠের পায় সাড়া

                     পাড়া হতে পাড়া।

         আজি তার আত্মত্যাগ বাক্যত্যাগে হয়েছে কঠোর

                             রোগীর সেবার কার্যে মোর।

         ও পাশের ঘরে

                   দিন কাটে সঙ্গীহীন নিঃশব্দ প্রহরে।

         বাধা দেয় যাদের প্রবেশে

         আহা যদি কাছে পেত, এই ব'লে মরে যে ক্ষোভে সে।

                          তবু বিধাতার বর

                               আছে তার পর,

         বাক্যরুদ্ধ হয়ে গেলে তবু তার কাছে

                               অন্য পথ আছে।

         অনায়াসে শব্দ আর মিল

              কলমের মুখে তার করে কিলবিল।

                               মোর দিনমান

         মুখর খাতায় তার যাহা তাহা দিতেছে জোগান

                     রচে বসি তুচ্ছতার ছবি--

         ভয়ে মরি ছাই-চাপা পড়ে বুঝি কবি।

                     মনে আছে একমাত্র আশা

              বুদ্‌বুদের ইতিহাসে সুদীর্ঘ কালের নেই ভাষা।

         বাহিরেতে চলিয়াছে দেশে দেশে বিরাটের পালা

         অকিঞ্চিৎকরের স্তূপ জমাইছে এ আরোগ্যশালা।

                   লিখিবার কথা কোথা রুদ্ধ ঘরে দু' চক্ষু বুলাই।

                      কোনোমতে ছড়া কেটে নিজের ভুলাই।

                   ধাক্কা তারে দেয় পিছে খ্যাপা ঊনপঞ্চাশ বায়ু,এবেলা ওবেলা তার আয়ু,

                   এরি মধ্যে কবি-বেশে সুধাকান্ত এল

         ইহাকেই বলে না কি strange bed-fellow!

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •