ওকে কেন কাঁদালি! ও যে কেঁদে চলে যায়-- ওর হাসিমুখ যে আর দেখা যাবে না॥ শূন্যপ্রাণে চলে গেল, নয়নেতে অশ্রুজল-- এ জনমে আর ফিরে চাবে না॥ দু দিনের এ বিদেশে কেন এল ভালোবেসে, কেন নিয়ে গেল প্রাণে বেদনা। হাসি খেলা ফুরালো রে, হাসিব আর কেমনে! হাসিতে তার কান্নামুখ পড়ে যে মনে। ডাক্ তারে একবার-- কঠিন নহে প্রাণ তার!-- আর বুঝি তার সাড়া পাবে না॥
এ কী আনন্দ, আহা-- হৃদয়ে দেহে ঘুচালে মম সকল বন্ধ। দুঃখ আমার আজি হল যে ধন্য, মৃত্যুগহনে লাগে অমৃতসুগন্ধ। এলে কারাগারে রজনীর পারে উষাসম মুক্তিরূপা অয়ি লক্ষ্ণী দয়াময়ী।
কেমনে শুধিব বলো তোমার এ ঋণ। এ দয়া তোমার, মনে রবে চিরদিন। যবে এ হৃদয়মাঝে ছিল না জীবন, মনে হ'ত ধরা যেন মরুর মতন, সে হৃদে ঢালিয়ে তব প্রেমবারিধার নূতন জীবন যেন করিলে সঞ্চার। একদিন এ হৃদয়ে বাজিত প্রেমের গান, কবিতায় কবিতায় পূর্ণ যেন ছিল প্রাণ-- দিনে দিনে সুখগান থেমে গেল এ হৃদয়ে, নিশীথশ্মশানসম আছিল নীরব হয়ে-- সহসা উঠেছে বাজি তব করপরশনে, পুরানো সকল ভাব জাগিয়া উঠেছে মনে, বিরাজিছে এ হৃদয়ে যেন নব-ঊষাকাল, শূন্য হৃদয়ের যত ঘুচেছে আঁধারজাল। কেমনে শুধিব বলো তোমার এ ঋণ। এ দয়া তোমার, মনে রবে চিরদিন॥