মোর স্বপন-তরীর কে তুই নেয়ে। লাগল পালে নেশার হাওয়া, পাগল পরান চলে গেয়ে। আমায় ভুলিয়ে দিয়ে যা তোর দুলিয়ে দিয়ে না, ও তোর সুদূর ঘাটে চল্ রে বেয়ে। আমার ভাবনা তো সব মিছে, আমার সব পড়ে থাক্ পিছে। তোমারঘোমটা খুলে দাও তোমার নয়ন তুলে চাও, দাও হাসিতে মোর পরান ছেয়ে॥
আজি শরততপনে প্রভাতস্বপনে কী জানি পরান কী যে চায়। ওই শেফালির শাখে কী বলিয়া ডাকে বিহগ বিহগী কী যে গায় গো ॥ আজি মধুর বাতাসে হৃদয় উদাসে, রহে না আবাসে মন হায়-- কোন্ কুসুমের আশে কোন্ ফুলবাসে সুনীল আকাশে মন ধায় গো ॥ আজি কে যেন গো নাই, এ প্রভাতে তাই জীবন বিফল হয় গো-- তাই চারি দিকে চায়, মন কেঁদে গায় "এ নহে, এ নহে, নয় গো'। কোন্ স্বপনের দেশে আছে এলোকেশে কোন্ ছায়াময়ী অমরায়। আজি কোন্ উপবনে, বিরহবেদনে আমারি কারণে কেঁদে যায় গো ॥ আজি যদি গাঁথি গান অথিরপরান, সে গান শুনাব কারে আর। আমি যদি গাঁথি মালা লয়ে ফুলডালা, কাহারে পরাব ফুলহার॥ আমি আমার এ প্রাণ যদি করি দান, দিব প্রাণ তবে কার পায়। সদা ভয় হয় মনে পাছে অযতনে মনে মনে কেহ ব্যথা পায় গো ॥
যদি কেহ নাহি চায়, আমি লইব, তোমার সকল দুখ আমি সহিব। আমার হৃদয় মন, সব দিব বিসর্জন, তোমার হৃদয়-ভার আমি বহিব। ভুল-ভাঙা দিবালোকে, চাহিব তোমার চোখে, প্রশান্ত সুখের কথা আমি কহিব।