"সাত-আটটে সাতাশ," আমি বলেছিলাম বলে গুরুমশায় আমার 'পরে উঠল রাগে জ্বলে। মা গো, তুমি পাঁচ পয়সায় এবার রথের দিনে সেই যে রঙিন পুতুলখানি আপনি দিলে কিনে খাতার নিচে ছিল ঢাকা; দেখালে এক ছেলে, গুরুমশায় রেগেমেগে ভেঙে দিলেন ফেলে। বল্লেন, "তোর দিনরাত্তির কেবল যত খেলা। একটুও তোর মন বসে না পড়াশুনার বেলা!" মা গো, আমি জানাই কাকে? ওঁর কি গুরু আছে? আমি যদি নালিশ করি এক্খনি তাঁর কাছে? কোনোরকম খেলার পুতুল নেই কি, মা, ওঁর ঘরে সত্যি কি ওঁর একটুও মন নেই পুতুলের 'পরে? সকালসাঁজে তাদের নিয়ে করতে গিয়ে খেলা কোনো পড়ায় করেন নি কি কোনোরকম হেলা? ওঁর যদি সেই পুতুল নিয়ে ভাঙেন কেহ রাগে, বল দেখি, মা, ওঁর মনে তা কেমনতরো লাগে?
লাঙল কাঁদিয়া বলে ছাড়ি দিয়ে গলা, তুই কোথা হতে এলি ওরে ভাই ফলা? যেদিন আমার সাথে তোরে দিল জুড়ি সেই দিন হতে মোর মাথা-খোঁড়াখুঁড়ি। ফলা কহে, ভালো ভাই, আমি যাই খ'সে, দেখি তুমি কী আরামে থাক ঘরে ব'সে। ফলাখানা টুটে গেল, হল্খানা তাই খুশি হয়ে পড়ে থাকে, কোনো কর্ম নাই। চাষা বলে, এ আপদ আর কেন রাখা, এরে আজ চালা করে ধরাইব আখা। হল্ বলে, ওরে ফলা, আয় ভাই ধেয়ে-- খাটুনি যে ভালো ছিল জ্বলুনির চেয়ে।