এ কথা স্মরণে রাখা কেন গো কঠিন তুমি আছ সব চেয়ে, আছ নিশিদিন, আছ প্রতি ক্ষণে--আছ দূরে, আছ কাছে, যাহা-কিছু আছে, তুমি আছ ব'লে আছে। যেমনি প্রবেশ আমি করি লোকালয়ে, যখনি মানুষ আসে স্তুতিনিন্দা লয়ে-- লয়ে রাগ, লয়ে দ্বেষ, লয়ে গর্ব তার অমনি সংসার ধরে পর্বত-আকার আবরিয়া ঊর্ধ্বলোক; তরঙ্গিয়া উঠে লাভজয় লোভক্ষোভ; নরের মুকুটে যে হীরক জ্বলে তারি আলোক-ঝলকে অন্য আলো নাহি হেরি দ্যুলোকে ভূলোকে। মানুষ সম্মুখে এলে কেন সেই ক্ষণে তোমার সম্মুখে আছি নাহি পড়ে মনে?
ওকালতি ব্যবসায়ে ক্রমশই তার জমেছিল একদিন মস্ত পসার। ভাগ্যটা ঘাটে ঘাটে কী করিয়া শেষে একদা জজের পদে ঠেকেছিল এসে। সদাই বাড়িতে তার মহা ধুমধাম, মুখে মুখে চারি দিকে রটে গেছে নাম। আজ সে তো কালীনাথ, আগে ছিল কেলে-- কাউকে ফাঁসিতে দেয় কাউকে বা জেলে। ক্লাসে ছিল একদিন একেবারে নিচু, মাস্টার বলতেন হবে নাকো কিছু। সব চেয়ে বোকারাম, সব চেয়ে হাঁদা-- দুষ্টুমি বুদ্ধিটা ছিল তার সাধা! ক্লাসে ছিল বিখ্যাত তারি দৃষ্টান্ত, সেই ইতিহাস তার সকলেই জানত। একদিন দেখা গেল ছুটির বিকালে ফলে ভরা আম গাছে একা বসি ডালে কামড় লাগাতেছিল পাকা পাকা আমে-- ডাক পাড়ে মাস্টার, কিছুতে না নামে। আম পেড়ে খেতে তোরে করেছি বারণ, সে কথা শুনিস নে যে বল্ কী কারণ। কালু বলে, পেড়ে আমি খাই নে তো তাই, ডালে ব'সে ব'সে ফল ক'ষে কামড়াই। মাস্টার বলে তারে, আয় তুই নাবি-- যত ফল খেয়েছিস তত চড় খাবি! কালু বলে, পালিয়াছি গুরুর আদেশ এই শাস্তিই যদি হয় তার শেষ, তা হলে তো ভালো নয় পড়াশুনা করা-- গুরুর বচন শুনে চড় খেয়ে মরা।