আমি তারেই খুঁজে বেড়াই যে রয় মনে, আমার মনে। সে আছে ব'লে আমার আকাশ জুড়ে ফোটে তারা রাতে, প্রাতে ফুল ফুটে রয় বনে আমার বনে॥ সে আছে ব'লে চোখের তারার আলোয় এত রূপের খেলা রঙের মেলা অসীম সাদায় কালোয়, সে মোর সঙ্গে থাকে বলে আমার অঙ্গে অঙ্গে পুলক লাগায় দখিন সমীরণে। তারি বাণী হঠাৎ উঠে পুরে আনমনা কোন্ তানের মাঝে আমার গানের সুরে। দুখের দোলে হঠাৎ মোরে দোলায় কাজের মাঝে লুকিয়ে থেকে আমারে কাজ ভোলায়। সে মোর চিরদিনের ব'লে তারি পুলকে মোর পলকগুলি ভরে ক্ষণে ক্ষণে॥
রোদনভরা এ বসন্ত সখী কখনো আসে নি বুঝি আগে। মোর বিরহবেদনা রাঙালো কিংশুকরক্তিমরাগে॥ কুঞ্জদ্বারে বনমল্লিকা সেজেছে পরিয়া নব পত্রালিকা, সারা দিন-রজনী অনিমিখা কার পথ চেয়ে জাগে॥ দক্ষিণসমীরে দূর গগনে একেলা বিরহী গাহে বুঝি গো। কুঞ্জবনে মোর মুকুল যত আবরণবন্ধন ছিঁড়িতে চাহে। আমি এ প্রাণের রুদ্ধ দ্বারে ব্যাকুল কর হানি বারে বারে-- দেওয়া হল না যে আপনারে এই ব্যথা মনে লাগে॥
না জানি কোথা এলুম, এ যে ঘোর বন। কোথা গেল সে করিশিশু, কোথা লুকাল! একে ত জটিল বন, তাহে আঁধার ঘন! যাক্-না যাবে সে কত দূর, কত দূর-- যাব পিছে পিছে-- না না না না, ও কি শুনি! ওই সে সরযূতীরে করিছে সলিল পান শবদ শুনি যে ওই, এই তবে ছাড়ি বাণ!