দেহে আর মনে প্রাণে হয়ে একাকার একি অপরূপ লীলা এ অঙ্গে আমার! একি জ্যোতি, একি ব্যোম দীপ্ত দীপ-জ্বালা দিন আর রজনীর চিরনাট্যশালা! একি শ্যাম বসুন্ধরা, সমুদ্রে চঞ্চল, পর্বতে কঠিন, তরুপল্লবে কোমল, অরণ্যে আঁধার! একি বিচিত্র বিশাল অবিশ্রাম রচিতেছে সৃজনের জাল আমার ইন্দ্রিয়যন্ত্রে ইন্দ্রজালবৎ! প্রত্যেক প্রাণীর মাঝে প্রকাণ্ড জগৎ। তোমারি মিলনশয্যা, হে মোর রাজন্, ক্ষুদ্র এ আমার মাঝে অনন্ত আসন অসীম বিচিত্রকান্ত। ওগো বিশ্বভূপ, দেহে মনে প্রাণে আমি একি অপরূপ!
রান্নার সব ঠিক, পেয়েছি তো নুনটা-- অল্প অভাব আছে, পাইনি বেগুনটা। পরিবেষণের তরে আছি মোরা সব ভাই, যাদের আসার কথা অনাগত সব্বাই। পান পেলে পুরো হয়, জুটিয়েছি চুনটা-- একটু-আধটু বাকি, নাই তাহে কুণ্ঠা।
হে বন্ধু, সবার চেয়ে চিনি তোমাকেই এ কথায় পূর্ণ সত্য নেই। চিনি আমি সংসারের শত-সহস্রেরে কাজের বা অকাজের ঘেরে নির্দিষ্ট সীমায় যারা স্পষ্ট হয়ে জাগে, প্রত্যহের ব্যবহারে লাগে, প্রাপ্য যাহা হাতে দেয় তাই, দান যাহা তাহা নাহি পাই। অনন্তের সমুদ্রমন্থনে গভীর রহস্য হতে তুমি এলে আমার জীবনে। উঠিয়াছ অতলের অস্পষ্টতাখানি আপনার চারি দিকে টানি। নীহারিকা রহে যথা কেন্দ্রে তার নক্ষত্রেরে ঘেরি, জ্যোতির্ময় বাষ্প-মাঝে দূরবিন্দু তারাটিরে হেরি। তোমা-মাঝে শিল্পী তার রেখে গেছে তর্জনীর মানা, সব নহে জানা। সৌন্দর্যের যে-পাহারা জাগিয়া রয়েছে অন্তঃপুরে সে আমারে নিত্য রাখে দূরে।