যা হারিয়ে যায় তা আগলে বসে রইব কত আর। আর পারি নে রাত জাগতে হে নাথ, ভাবতে অনিবার। আছি রাত্রিদিবস ধরে দুয়ার আমার বন্ধ করে, আসতে যে চায় সন্দেহে তায় তাড়াই বারে বারে। তাই তো কারো হয় না আসা আমার একা ঘরে। আনন্দময় ভুবন তোমার বাইরে খেলা করে। তুমিও বুঝি পথ নাহি পাও, এসে এসে ফিরিয়া যাও, রাখতে যা চাই রয় না তাও ধুলায় একাকার।
বৃষ্টি কোথায় নুকিয়ে বেড়ায় উড়ো মেঘের দল হয়ে, যেই দেখা দেয় আর-এক ধারায় শ্রাবণ-ধারার জল হয়ে। আমি ভাবি চুপটি করে মোর দশা হয় ঐ যদি! কেই বা জানে আমি আবার আর-একজনও হই যদি! একজনারেই তোমরা চেন আর-এক আমি কারোই না। কেমনতরো ভাবখানা তার মনে আনতে পারই না। হয়তো বা ঐ মেঘের মতোই নতুন নতুন রূপ ধরে কখন যে সে ডাক দিয়ে যায়, কখন থাকে চুপ করে। কখন বা সে পুবের কোণে আলো-নদীর বাঁধ বাঁধে, কখন বা সে আধেক রাতে চাঁদকে ধরার ফাঁদ ফাঁদে। শেষে তোমার ঘরের কথা মনেতে তার যেই আসে, আমার মতন হয়ে আবার তোমার কাছে সেই আসে। আমার ভিতর লুকিয়ে আছে দুই রকমের দুই খেলা, একটা সে ঐ আকাশ-ওড়া, আরেকটা এই ভুঁই-খেলা।