জোড়াসাঁকো, ১৩ নভেম্বর-প্রাতে, ১৯৪০


 

৯ (he prachin tomoswini)


হে প্রাচীন তমস্বিনী,

আজি আমি রোগের বিমিশ্র তমিস্রায়

মনে মনে হেরিতেছি--

কালের প্রথম কল্পে নিরন্তর অন্ধকারে

বসেছ সৃষ্টির ধ্যানে

কী ভীষণ একা,

বোবা তুমি,অন্ধ তুমি।

অসুস্থ দেহের মাঝে ক্লিষ্ট রচনার যে প্রয়াস

তাই হেরিলাম আমি

অনাদি আকাশে।

পঙ্গু উঠিতেছে কাঁদি নিদ্রার অতল-মাঝে,

আত্মপ্রকাশের ক্ষুধা বিগলিত লৌহগর্ভ হতে

গোপনে উঠিছে জ্বলি শিখায় শিখায়।

অচেতন তোমার অঙ্গুলি

অস্পষ্ট শিল্পের মায়া বুনিয়া চলিছে;

আদিমহার্ণব-গর্ভ হতে

অকস্মাৎ ফুলে ফুলে উঠিতেছে

প্রকাণ্ড স্বপ্নের পিণ্ড,

বিকলাঙ্গ, অসম্পূর্ণ--

অপেক্ষা করিছে অন্ধকারে

কালের দক্ষিণহস্তে পাবে কবে পূর্ণ দেহ,

বিরূপ কদর্য নেবে সুসংগত কলেবর

নব সূর্যালোকে।

মূর্তিকার দিবে আসি মন্ত্র পড়ি,

ধীরে ধীরে উদঘাটিবে বিধাতার অন্তর্গূঢ় সংকল্পের ধারা।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •