বহুকাল আগে তুমি দিয়েছিলে একগুচ্ছ ধূপ, আজি তার ধোঁয়া হতে বাহিরিল অপরূপ রূপ; যেন কোন্ পুরানী আখ্যানে স্তব্ধ মোর ধ্যানে ধীরপদে এল কোন্ মালবিকা লয়ে দীপশিখা মহাকালমন্দিরের দ্বারে যুগান্তের কোন্ পারে। সদ্যস্নান-পরে সিক্ত বেণী গ্রীবা তার জড়াইয়া ধরে, চন্দনের মৃদু গন্ধ আসে অঙ্গের বাতাসে। মনে হয়, এই পূজারিনী-- এরে আমি বার বার চিনি, আসে মৃদুমন্দ পদে চিরদিবসের বেদিতলে তুলি ফুল শুচিশুভ্র বসন-অঞ্চলে। শান্ত স্নিগ্ধ চোখের দৃষ্টিতে সেই বাণী নিয়ে আসে এ যুগের ভাষার সৃষ্টিতে। সুললিত বাহুর কঙ্কণে প্রিয়জন-কল্যাণের কামনা বহিছে সযতনে। প্রীতি আত্মহারা আদি সূর্যোদয় হতে বহি আনে আলোকের ধারা। দূর কাল হতে তারি হস্ত দুটি লয়ে সেবারস আতপ্ত ললাট মোর আজও ধীরে করিছে পরশ।
ধূপ আপনারে মিলাইতে চাহে গন্ধে, গন্ধ সে চাহে ধূপেরে রহিতে জুড়ে। সুর আপনারে ধরা দিতে চাহে ছন্দে, ছন্দ ফিরিয়া ছুটে যেতে চায় সুরে। ভাব পেতে চায় রূপের মাঝারে অঙ্গ, রূপ পেতে চায় ভাবের মাঝারে ছাড়া। অসীম সে চাহে সীমার নিবিড় সঙ্গ, সীমা চায় হতে অসীমের মাঝে হারা। প্রলয়ে সৃজনে না জানি এ কার যুক্তি, ভাব হতে রূপে অবিরাম যাওয়া-আসা, বন্ধ ফিরিছে খুঁজিয়া আপন মুক্তি, মুক্তি মাগিছে বাঁধনের মাঝে বাসা।