ওদের কথায় ধাঁদা লাগে তোমার কথা আমি বুঝি। তোমার আকাশ তোমার বাতাস এই তো সবি সোজাসুজি। হৃদয়-কুসুম আপনি ফোটে, জীবন আমার ভরে ওঠে, দুয়ার খুলে চেয়ে দেখি হাতের কাছে সকল পুঁজি। সকাল-সাঁঝে সুর যে বাজে ভুবনজোড়া তোমার নাটে, আলের জোয়ার বেয়ে তোমার তরী আসে আমার ঘাটে। শুনব কী আর বুঝব কী বা, এই তো দেখি রাত্রিদিবা ঘরেই তোমার আনাগোনা, পথে কী আর তোমায় খুঁজি?
এই ছড়াগুলি ছেলেদের জন্যে লেখা। সবগুলো মাথায় এক নয়; রোলার চালিয়ে প্রত্যেকটি সমান সুগম করা হয়নি। এর মধ্যে অপেক্ষাকৃত জটিল যদি কোনোটা থাকে তবে তার অর্থ হবে কিছু দুরূহ, তবু তার ধ্বনিতে থাকবে সুর। ছেলেমেয়েরা অর্থ নিয়ে নালিশ করবে না, খেলা করবে ধ্বনি নিয়ে। ওরা অর্থলোভী জাত নয়। ছড়ার ছন্দ প্রাকৃত ভাষার ঘরাও ছন্দ। এ ছন্দ মেয়েদের মেয়েলি আলাপ, ছেলেদের ছেলেমি প্রলাপের বাহনগিরি করে এসেছে। ভদ্রসমাজে সভাযোগ্য হবার কোনো খেয়াল এর মধ্যে নেই। এর ভঙ্গীতে এর সজ্জায় কাব্যসৌন্দর্য সহজে প্রবেশ করে, কিন্তু সে অজ্ঞাতসারে। এই ছড়ায় গভীর কথা হালকা চালে পায়ে নূপুর বাজিয়ে চলে, গাম্ভীর্যের গুমোর রাখে না। অথচ এই ছড়ার সঙ্গে ব্যবহার করতে গিয়ে দেখা গেল, যেটাকে মনে হয় সহজ সেটাই সব চেয়ে কম সহজ।