সৃষ্টির চলেছে খেলা চারি দিক হতে শত ধারে কালের অসীম শূন্য পূর্ণ করিবারে। সম্মুখে যা কিছু ঢালে পিছনে তলায় বারে বারে; নিরন্তর লাভ আর ক্ষতি, তাহাতেই দেয় তারে গতি। কবির ছন্দের খেলা সেও থাকি থাকি নিশ্চিহ্ন কালের গায়ে ছবি আঁকা-আঁকি। কাল যায়, শূন্য থাকে বাকি। এই আঁকা-মোছা নিয়ে কাব্যের সচল মরীচিকা ছেড়ে দেয় স্থান, পরিবর্তমান জীবনযাত্রার করে চলমান টীকা। মানুষ আপন-আঁকা কালের সীমায় সান্ত্বনা রচনা করে অসীমের মিথ্যা মহিমায়, ভুলে যায় কত-না যুগের বাণীরূপ ভূমিগর্ভে বহিতেছে নিঃশব্দের নিষ্ঠুর বিদ্রূপ।
তুমি আমার আঙিনাতে ফুটিয়ে রাখ ফুল। আমার আনাগোনার পথখানি হয় সৌরভে আকুল। ওগো ওই তোমারি ফুল। ওরা আমার হৃদয়পানে মুখ তুলে যে থাকে। ওরা তোমার মুখের ডাক নিয়ে যে আমারি নাম ডাকে। ওগো ওই তোমারি ফুল। তোমার কাছে কী যে আমি সেই কথাটি হেসে ওরা আকাশেতে ফুটিয়ে তোলে, ছড়ায় দেশে দেশে। ওগো ওই তোমারি ফুল। দিন কেটে যায় অন্যমনে,ওদের মুখে তবু প্রভু, তোমার মুখের সোহাগবাণী ক্লান্ত না হয় কভু। ওগো ওই তোমারি ফুল। প্রাতের পরে প্রাতে ওরা, রাতের পরে রাতে তোমার অন্তবিহীন যতনখানি বহন করে মাথে। ওগো ওই তোমারি ফুল। হাসিমুখে আমার যতন নীরব হয়ে যাচে। তোমার অনেক যুগের পথ-চাওয়াটি ওদের মুখে আছে। ওগো ওই তোমারি ফুল।