তবু কি ছিল না তব সুখদুঃখ যত, আশা নৈরাশ্যের দ্বন্দ্ব আমাদেরি মতো, হে অমর কবি! ছিল না কি অনুক্ষণ রাজসভা-ষড়্চক্র, আঘাত গোপন? কখনো কি সহ নাই অপমানভার, অনাদর, অবিশ্বাস, অন্যায় বিচার, অভাব কঠোর ক্রূর--নিদ্রাহীন রাতি কখনো কি কাটে নাই বক্ষে শেল গাঁথি? তবু সে সবার ঊর্ধ্বে নির্লিপ্ত নির্মল ফুটিয়াছে কাব্য তব সৌন্দর্যকমল আনন্দের সূর্য-পানে; তার কোনো ঠাঁই দুঃখদৈন্যদুর্দিনের কোনো চিহ্ন নাই। জীবনমন্থনবিষ নিজে করি পান অমৃত যা উঠেছিল করে গেছ দান।
যেতে যেতে একলা পথে নিবেছে মোর বাতি। ঝড় এসেছে, ওরে, এবার ঝড়কে পেলেম সাথি। আকাশ-কোণে সর্বনেশে ক্ষণে ক্ষণে উঠছে হেসে, প্রলয় আমার কেশে বেশে করছে মাতামাতি। যে পথ দিয়ে যেতেছিলেম ভুলিয়ে দিল তারে, আবার কোথা চলতে হবে গভীর অন্ধকারে। বুঝি বা এই বজ্ররবে নূতন পথের বার্তা কবে, কোন্ পুরীতে গিয়ে তবে প্রভাত হবে রাতি।