আমরা খুঁজি খেলার সাথি-- ভোর না হতে জাগাই তাদের ঘুমায় যারা সারা রাতি॥ আমরা ডাকি পাখির গলায়, আমরা নাচি বকুলতলায়, মন ভোলাবার মন্ত্র জানি, হাওয়াতে ফাঁদ আমরা পাতি। মরণকে তো মানি নে রে, কালের ফাঁসি ফাঁসিয়ে দিয়ে লুঠ-করা ধন নিই যে কেড়ে। আমরা তোমার মনোচোরা, ছাড়ব না গো তোমায় মোরা-- চলেছ কোন্ আঁধারপানে সেথাও জ্বলে মোদের বাতি॥
দূরদেশী সেই রাখাল ছেলে আমার বাটে বটের ছায়ায় সারা বেলা গেল খেলে॥ গাইল কী গান সেই তা জানে, সুর বাজে তার আমার প্রাণে-- বলো দেখি তোমরা কি তার কথার কিছু আভাস পেলে॥ আমি তারে শুধাই যবে 'কী তোমারে দিব আনি'-- সে শুধু কয়, 'আর কিছু নয়, তোমার গলার মালাখানি।' দিই যদি তো কী দাম দেবে যায় বেলা সেই ভাব্না ভেবে-- ফিরে এসে দেখি ধুলায় বাঁশিটি তার গেছে ফেলে॥
সখী, সাধ করে যাহা দেবে তাই লইব। আহা মরি মরি সাধের ভিখারি, তুমি মনে মনে চাহ প্রাণমন। দাও যদি ফুল, শিরে তুলে রাখিব দেয় যদি কাঁটা। তাও সহিব। আহা মরি মরি সাধের ভিখারি, তুমি মনে মনে চাহ প্রাণমন। যদি এক বার চাও সখী মধুর নয়ানে, ওই আঁখি-সুধাপানে, চিরজীবন মাতি রহিব। যদি কঠিন কটাক্ষ মিলে। তাও হৃদয়ে বিঁধায়ে চিরজীবন বহিব। আহা মরি মরি সাধের ভিখারি, তুমি মনে মনে চাহ প্রাণমন।