বিদায় করেছ যারে নয়ন-জলে, এখন ফিরাবে তারে কিসের ছলে। আজি মধু সমীরণে, নিশীথে কুসুম-বনে, তারে কি পড়েছে মনে বকুল-তলে? এখন ফিরাবে আর কিসের ছলে। সেদিনো তো মধুনিশি, প্রাণে গিয়েছিল মিশি, মুকুলিত দশদিশি কুসুম-দলে। দুটি সোহাগের বাণী, যদি হত কানাকানি যদি ঐ মালাখানি পরাতে গলে। এখন ফিরাবে তারে কিসের ছলে। মধুনিশি পূর্ণিমার, ফিরে আসে বার বার, সে জন ফেরে না আর, যে গেছে চলে। ছিল তিথি অনকূল, শুধু নিমেষের ভুল, চিরদিন তৃষাকুল পরান জ্বলে। এখন ফিরাবে তারে কিসের ছলে।
দুই হৃদয়ের নদী একত্র মিলিল যদি বলো, দেব, কার পানে আগ্রহে ছুটিয়া যায়॥ সম্মুখে রয়েছে তার তুমি প্রেমপারাবার, তোমারি অনন্তহৃদে দুটিতে মিলাতে চায়॥ সেই এক আশা করি দুইজনে মিলিয়াছে, সেই এক লক্ষ্য ধরি দুইজনে চলিয়াছে। পথে বাধা শত শত, পাষাণ পর্বত কত, দুই বলে এক হয়ে ভাঙিয়া ফেলিবে তায়॥ অবশেষে জীবনের মহাযাত্রা ফুরাইলে তোমারি স্নেহের কোলে যেন গো আশ্রয় মিলে, দুটি হৃদয়ের সুখ দুটি হৃদয়ের দুখ দুটি হৃদয়ের আশা মিলায় তোমার পায়॥
আজি তোমায় আবার চাই শুনাবারে যে কথা শুনায়েছি বারে বারে॥ আমার পরানে আজি যে বাণী উঠিছে বাজি অবিরাম বর্ষণধারে॥ কারণ শুধায়ো না, অর্থ নাহি তার, সুরের সঙ্কেত জাগে পুঞ্জিত বেদনার। স্বপ্নে যে বাণী মনে মনে ধ্বনিয়া উঠে ক্ষণে ক্ষণে কানে কানে গুঞ্জরিব তাই বাদলের অন্ধকারে॥