কারে দিব দোষ বন্ধু, কারে দিব দোষ! বৃথা কর আস্ফালন, বৃথা কর রোষ। যারা শুধু মরে কিন্তু নাহি দেয় প্রাণ, কেহ কভু তাহাদের করে নি সম্মান। যতই কাগজে কাঁদি, যত দিই গালি, কালামুখে পড়ে তত কলঙ্কের কালি। যে তোমারে অপমান করে অহর্নিশ তারি কাছে তারি 'পরে তোমার নালিশ! নিজের বিচার যদি নাই নিজহাতে, পদাঘাত খেয়ে যদি না পার ফিরাতে-- তবে ঘরে নতশিরে চুপ করে থাক্, সাপ্তাহিকে দিগ্বিদিকে বাজাস নে ঢাক। একদিকে অসি আর অবজ্ঞা অটল, অন্য দিকে মসী আর শুধু অশ্রুজল।
এ মোহ ক'দিন থাকে, এ মায়া মিলায়, কিছুত পারে না আর বাঁধিয়া রাখিতে। কোমল বাহুর ডোর ছিন্ন হয়ে যায়, মদিরা উথলে নাকো মদির আঁখিতে। কেহ কারে নাহি চিনে আঁধার নিশায়। ফুল ফোটা সাঙ্গ হলে গাহে না পাখিতে। কোথা সেই হাসিপ্রান্ত চুম্বনতৃষিত রাঙা পুষ্পটুকু যেন প্রস্ফুট অধর! কোথা কুসুমিত তনু পূর্ণবিকশিত, কম্পিত পুলকভরে, যৌবনকাতর! তখন কি মনে পড়ে সেই ব্যাকুলতা, সেই চিরপিপাসিত যৌবনের কথা, সেই প্রাণ পরিপূর্ণ মরণ-অনল-- মনে পড়ে হাসি আসে? চোখে আসে জল?