বেহাগ আমি কেবলি স্বপন করেছি বপন বাতাসে-- তাই আকাশকুসুম করিনু চয়ন হতাশে। ছায়ার মতন মিলায় ধরণী, কূল নাহি পায় আশার তরণী, মানসপ্রতিমা ভাসিয়া বেড়ায় আকাশে। কিছু বাঁধা পড়িল না শুধু এ বাসনা- বাঁধনে। কেহ নাহি দিল ধরা শুধু এ সুদূর সাধনে। আপনার মনে বসিয়া একেলা অনলশিখায় কী করিনু খেলা, দিনশেষে দেখি ছাই হল সব হুতাশে! আমি কেবলি স্বপন করেছি বপন বাতাসে।
কাল প্রাতে মোর জন্মদিনে এ শৈল-আতিথ্যবাসে বুদ্ধের নেপালী ভক্ত এসেছিল মোর বার্তা শুনে। ভূতলে আসন পাতি বুদ্ধের বন্দনামন্ত্র শুনাইল আমার কল্যাণে-- গ্রহণ করিনু সেই বাণী। এ ধারায় জন্ম নিয়ে যে মহামানব সব মানবের জন্ম সার্থক করেছে একদিন, মানুষের জন্মক্ষণ হতে নারায়ণী এ ধরণী যাঁর আবির্ভাব লাগি অপেক্ষা করেছে বহু যুগ, যাঁহাতে প্রত্যক্ষ হল ধরায় সৃষ্টির অভিপ্রায়, শুভক্ষণে পুণ্যমন্ত্রে তাঁহারে স্মরণ করি জানিলাম মনে-- প্রবেশি মানবলোকে আশি বর্ষ আগে এই মহাপুরুষের পুণ্যভাগী হয়েছি আমিও।
যে তোমারে দূরে রাখি নিত্য ঘৃণা করে, হে মোর স্বদেশ, মোরা তারি কাছে ফিরি সম্মানের তরে পরি তারি বেশ। বিদেশী জানে না তোরে অনাদরে তাই করে অপমান, মোরা তারি পিছে থাকি যোগ দিতে চাই আপন সন্তান। তোমার যা দৈন্য, মাতঃ, তাই ভূষা মোর কেন তাহা ভুলি? পরধনে ধিক্ গর্ব, করি করজোড় ভরি ভিক্ষাঝুলি! পুণ্যহস্তে শাক-অন্ন তুলে দাও পাতে তাই যেন রুচে, মোটা বস্ত্র বুনে দাও যদি নিজহাতে তাহে লজ্জা ঘুচে। সেই সিংহাসন--যদি অঞ্চলটি পাত, কর স্নেহ দান। যে তোমারে তুচ্ছ করে সে আমারে, মাতঃ, কী দিবে সম্মান!