ফাল্গুন ১৩৩০


 

গানের সাজি (ganer saji)


গানের সাজি এনেছি আজি,

     ঢাকাটি তার লও গো খুলে--

         দেখো তো চেয়ে কী আছে।

যে থাকে মনে স্বপন-বনে

     ছায়ার দেশে ভাবের কূলে

         সে বুঝি কিছু দিয়াছে।

কী যে সে তাহা আমি কি জানি,

ভাষায়-চাপা কোন্‌ সে বাণী

সুরের ফুলে গন্ধখানি

         ছন্দে বাঁধি গিয়াছে--

সে ফুল বুঝি হয়েছে পুঁজি,

         দেখো তো চেয়ে কী আছে।

 

দেখো তো, সখী দিয়েছে ও কি

     সুখের কাঁদা, দুখের হাসি,

         দুরাশাভরা চাহনি।

দিয়েছে কি না ভোরের বীণা,

     দিয়েছে কি সে রাতের বাঁশি

         গহন-গান-গাহনি।

বিপুল ব্যথা ফাগুন-বেলা,

সোহাগ কভু, কভু বা হেলা,

আপন মনে আগুন-খেলা

         পরানমন-দাহনি--

দেখো তো ডালা, সে স্মৃতি-ঢালা

             আছে আকুল চাহনি?

 

ডেকেছ কবে মধুর রবে,

     মিটালে কবে প্রাণের ক্ষুধা

         তোমার করপরশে,

সহসা এসে করুণ হেসে

     কখন চোখে ঢালিলে সুধা

         ক্ষণিক  তব দরশে--

বাসনা জাগে নিভৃতে চিতে

সে-সব দান ফিরায়ে দিতে

আমার দিনশেষের গীতে--

         সফল তারে করো-সে।

গানের সাজি খোলো গো আজি

         করুণ করপরশে।

 

রসে বিলীন সে-সব দিন

     ভরেছে আজি বরণডালা

         চরম তব বরণে!

সুরের ডোরে গাঁথনি করে

     রচিয়া মম বিরহমালা

রাখিয়া যাব চরণে।

একদা তব মনে না রবে,

স্বপনে এরা মিলাবে কবে,

তাহারি আগে মরুক তবে

         অমৃতময় মরণে

ফাগুনে তোরে বরণ করে

         সকল শেষ বরণে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •