আমি চঞ্চল হে, আমি সুদূরের পিয়াসি। দিন চলে যায়, আমি আনমনে তারি আশা চেয়ে থাকি বাতায়নে-- ওগো, প্রাণে মনে আমি যে তাহার পরশ পাবার প্রয়াসী॥ ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি-- মোর ডানা নাই, আছি এক ঠাঁই সে কথা যে যাই পাশরি॥ আমি উন্মনা হে, হে সুদূর, আমি উদাসী॥ রৌদ্র-মাখানো অলস বেলায় তরুমর্মরে ছায়ার খেলায় কী মুরতি তব নীল আকাশে নয়নে উঠে গো আভাসি। হে সুদূর, আমি উদাসী। ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি-- কক্ষে আমার রুদ্ধ দুয়ার সে কথা যে যাই পাশরি॥
সেই যদি সেই যদি ভাঙিল এ পোড়া হৃদি, সেই যদি ছাড়াছাড়ি হল দুজনায়, একবার এসো কাছে-- কী তাহাতে দোষ আছে। জন্মশোধ দেখে নিয়ে লইব বিদায়। সেই গান একবার গাও সখী, শুনি-- যেই গান একসনে গাইতাম দুইজনে, গাইতে গাইতে শেষে পোহাত যামিনী। চলিনু চলিনু তবে-- এ জন্মে কি দেখা হবে। এ জন্মের সুখ তবে হল অবসান॥ তবে, সখী, এসো কাছে। কী তাহাতে দোষ আছে। আরবার গাও, সখী, পুরানো সে গান॥