শ্রীযুক্ত প্রমথনাথ চৌধুরী কল্যাণীয়েষু তখন আমার আয়ুর তরণী যৌবনের ঘাট গেছে পেরিয়ে। যে-সব কাজ প্রবীণকে প্রাজ্ঞকে মানায় তাই নিয়ে পাকা করছিলেম পাকা চুলের মর্যাদা। এমন সময়ে আমাকে ডাক দিলে তোমার সবুজপত্রের আসরে। আমার প্রাণে এনে দিলে পিছুডাক, খবর দিলে নবীনের দরবারে আমার ছুটি মেলেনি। দ্বিধার মধ্যে মুখ ফিরালেম পেরিয়ে-আসা পিছনের দিকে। পর্যাপ্ত তারুণ্যের পরিপূর্ণ মূর্তি দেখা দিল আমার চোখের সম্মুখে। ভরা যৌবনের দিনেও যৌবনের সংবাদ এমন জোয়ারের বেগে এসে লাগেনি আমার লেখনীতে। আমার মন বুঝল যৌবনকে না ছাড়ালে যৌবনকে যায় না পাওয়া।; আজ এসেছি জীবনের শেষ ঘাটে। পুবের দিক থেকে হাওয়ায় আসে পিছুডাক, দাঁড়াই মুখ ফিরিয়ে। আজ সামনে দেখা দিল এ জন্মের সমস্তটা। যাকে ছেড়ে এলেম তাকেই নিচ্ছি চিনে। সরে এসে দেখছি আমার এতকালের সুখদুঃখের ঐ সংসার, আর তার সঙ্গে সংসারকে পেরিয়ে কোন্ নিরুদ্দিষ্ট। ঋষি-কবি প্রাণপুরুষকে বলেছেন-- "ভুবন সৃষ্টি করেছ তোমার এক অর্ধেককে দিয়ে,-- বাকি আধখানা কোথায় তা কে জানে।" সেই একটি-আধখানা আমার মধ্যে আজ ঠেকেছে আপন প্রান্তরেখায়; দুইদিকে প্রসারিত দেখি দুই বিপুল নিঃশব্দ, দুই বিরাট আধখানা,-- তারি মাঝখানে দাঁড়িয়ে শেষকথা ব'লে যাব-- দুঃখ পেয়েছি অনেক, কিন্তু ভালো লেগেছে, ভালোবেসেছি।
তুমি এ মনের সৃষ্টি, তাই মনোমাঝে এমন সহজে তব প্রতিমা বিরাজে। যখন তোমারে হেরি জগতের তীরে মনে হয় মন হতে এসেছ বাহিরে। যখন তোমারে দেখি মনোমাঝখানে মনে হয় জন্ম-জন্ম আছ এ পরানে। মানসীরূপিণী তুমি, তাই দিশে দিশে সকল সৌন্দর্যসাথে যাও মিলে মিশে। চন্দ্রে তব মুখশোভা, মুখে চন্দ্রোদয়, নিখিলের সাথে তব নিত্য বিনিময়। মনের অনন্ত তৃষ্ণা মরে বিশ্ব ঘুরি, মিশায় তোমার সাথে নিখিল মাধুরী। তার পরে মনগড়া দেবতারে মন ইহকাল পরকাল করে সমর্পণ।
I HAVE SCALED the peak and found no shelter in fame's bleak and barren height. Lead me, my Guide, before the light fades, into the valley of quiet where life's harvest mellows into golden wisdom.