এই তীর্থ-দেবতার ধরণীর মন্দির-প্রাঙ্গণে যে পূজার পুষ্পাঞ্জলি সাজাইনু সযত্ন চয়নে সায়াহ্নের শেষ আয়োজন; যে পূর্ণ প্রণামখানি মোর সারা জীবনের অন্তরের অনির্বাণ বাণী জ্বালায়ে রাখিয়া গেনু আরতির সন্ধ্যাদীপ-মুখে সে আমার নিবেদন তোমাদের সবার সম্মুখে হে মোর অতিথি যত। তোমরা এসেছ এ জীবনে কেহ প্রাতে, কেহ রাতে, বসন্তে, শ্রাবণ-বরিষনে; কারো হাতে বীণা ছিল, কেহ বা কম্পিত দীপশিখা এনেছিলে মোর ঘরে; দ্বার খুলে দুরন্ত ঝটিকা বার বার এনেছ প্রাঙ্গণে। যখন গিয়েছ চলে দেবতার পদচিহ্ন রেখে গেছ মোর গৃহতলে। আমার দেবতা নিল তোমাদের সকলের নাম; রহিল পূজায় মোর তোমাদের সবারে প্রণাম।
বসন্তে আজ ধরার চিত্ত হল উতলা। বুকের 'পরে দোলে রে তার পরান-পুতলা। আনন্দেরি ছবি দোলে দিগন্তেরি কোলে কোলে, গান দুলিছে,নীলাকাশের হৃদয়-উথলা। আমার দুটি মুগ্ধনয়ন নিদ্রা ভুলেছে। আজি আমার হৃদয়-দোলায় কে গো দুলিছে। দুলিয়ে দিল সুখের রাশি লুকিয়ে ছিল যতেক হাসি, দুলিয়ে দিল জনমভরা ব্যথা-অতলা।