তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভ'রে নিশিদিন অনিমেষে দেখছ মোরে। আমি চোখ এই আলোকে মেলব যবে তোমার ওই চেয়ে-দেখা সফল হবে, এ আকাশ দিন গুনিছে তারি তরে। ফাগুনের কুসুম-ফোটা হবে ফাঁকি, আমার এই একটি কুঁড়ি রইলে বাকি। সেদিনে ধন্য হবে তারার মালা, তোমার এই লোকে লোকে প্রদীপ জ্বালা; আমার এই আঁধারটুকু ঘুচলে পরে।
এসো এসো এই বুকে নিবাসে তোমার, যূথভ্রষ্ট বাণবিদ্ধ হরিণী আমার, এইখানে বিরাজিছে সেই চির হাসি, আঁধারিতে পারিবে না তাহা মেঘরাশি। এই হস্ত এ হৃদয় চিরকাল মতো তোমার, তোমারি কাজে রহিবে গো রত! কিসের সে চিরস্থায়ী ভালোবাসা তবে, গৌরবে কলঙ্কে যাহা সমান না রবে? জানি না, জানিতে আমি চাহি না, চাহি না, ও হৃদয়ে এক তিল দোষ আছে কিনা, ভালোবাসি তোমারেই এই শুধু জানি, তাই হলে হল, আর কিছু নাহি মানি। দেবতা সুখের দিনে বলেছ আমায়, বিপদে দেবতা সম রক্ষিব তোমায়, অগ্নিময় পথ দিয়া যাব তব সাথে, রক্ষিব, মরিব কিংবা তোমারি পশ্চাতে।
লিখি কিছু সাধ্য কী! যে দশা এ অভাগার লিখিতে সে বাধ্য কি। মশা-বুড়ি মরেছিল চাপড়ের যুদ্ধে সে-- পরলোকগত তার আত্মার উদ্দেশে আমারি লেখার ঘরে আজি তার শ্রাদ্ধ কি! যেখানে যে কেহ ছিল আত্মীয় পরিজন অভিজাতবংশীয় কেহ, কেহ হরিজন-- আমারি চরণজাত তাহাদের খাদ্য কি! বাঁশি নেই, কাঁসি নেই, নাহি দেয় হাঁক সে, পিঠেতে কাঁপাতে থাকে এক-জোড়া পাখ সে-- দেখিতে যেমনি হোক তুচ্ছ সে বাদ্য কি। আশ্রয় নিতে চাই মেলে যদি ড়বনরঢ়নক্ষ, এক ফোঁটা বাকি নেই নেবুঘাস-তেলটার-- মশারি দিনের বেলা কভু আচ্ছাদ্য কি! গাল তারে মিছে দিই অতি অশ্রাব্য, হাতে পিঠ চাপড়াব সেটা যে অভাব্য-- এ কাজে লাগাব শেষে চটি-জোড়া পাদ্য কি। পুজোর বাজারে আজি যদি লেখা না জোটাই, দুটো লাইনেরো মতো কলমটা না ছোটাই-- সম্পাদকের সাথে রবে সৌহার্দ্য কি।