অন্ধকারের সিন্ধুতীরে একলাটি ঐ মেয়ে আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিল আকাশপানে চেয়ে। মা যে তাহার স্বর্গে গেছে এই কথা সে জানে, ঐ প্রদীপের খেয়া বেয়ে আসবে ঘরের পানে। পৃথিবীতে অসংখ্য লোক, অগণ্য তার পথ, তারই মধ্যে স্বর্গ থেকে ছোট্ট ঘরের কোণ যায় কি দেখা যেথায় থাকে দুটিতে ভাইবোন। মা কি তাদের খুঁজে খুঁজে বেড়ায় অন্ধকারে, তারায় তারায় পথ হারিয়ে যায় শূন্যের পারে। মেয়ের হাতের একটি আলো জ্বালিয়ে দিল রেখে, সেই আলো মা নেবে চিনে অসীম দূরের থেকে। ঘুমের মধ্যে আসবে ওদের চুমো খাবার তরে রাতে রাতে মা-হারা সেই বিছানাটির 'পরে।
এবারের মতো করো শেষ প্রাণে যদি পেয়ে থাকো চরমের পরম উদ্দেশ; যদি অবসান সুমধুর আপন বীণার তারে সকল বেসুর সুরে বেঁধে তুলে থাকে; অস্তরবি যদি তোরে ডাকে দিনেরে মাভৈঃ বলে যেমন সে ডেকে নিয়ে যায় অন্ধকার অজানায়; সুন্দরের শেষ অর্চনায় আপনার রশ্মিচ্ছটা সম্পূর্ণ করিয়া দেয় সারা; যদি সন্ধ্যাতারা অসীমের বাতায়নতলে শান্তির প্রদীপশিখা দেখায় কেমন করে জ্বলে; যদি রাত্রি তার খুলে দেয় নীরবের দ্বার, নিয়ে যায় নিঃশব্দ সংকেতে ধীরে ধীরে সকল বাণীর শেষ সাগরসংগম-তীর্থ-তীরে; সেই শতদল হতে যদি গন্ধ পেয়ে থাকো তার মানসসরসে যাহা শেষ অর্ঘ্য, শেষ নমস্কার।