আর কেন, আর কেন, দলিত কুসুমে বহে বসন্ত-সমীরণ। ফুরায়ে গিয়াছে বেলা, এখন এ মিছে খেলা, নিশান্তে মলিন দীপ কেন জ্বলে অকারণ। অশ্রু যবে ফুরায়েছে তখন মুছাতে এলে, অশ্রুভরা হাসিভরা নবীন নয়ন ফেলে। এই লও, এই ধরো, এ মালা তোমরা পরো, এ খেলা তোমরা খেলো, সুখে থাকো অনুক্ষণ।
এ তো খেলা নয়, খেলা নয়। এ যে হৃদয়-দহন-জ্বালা, সখী। এ যে, প্রাণভরা ব্যাকুলতা, গোপন মর্মের ব্যথা, এ যে, কাহার চরণোদ্দেশে জীবন মরণ ঢালা। কে যেন সতত মোরে ডাকিয়ে আকুল করে, যাই যাই করে প্রাণ, যেতে পারি নে। যে কথা বলিতে চাহি, তা বুঝি বলিতে নাহি, কোথায় নামায়ে রাখি, সখী, এ প্রেমের ডালা। যতনে গাঁথিয়ে শেষে, পরাতে পারি নে মালা।
আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে তাই হেরি তায় সকল খানে॥ আছে সে নয়নতারায় আলোকধারায়, তাই না হারায়-- ওগো তাই দেখি তায় যেথায় সেথায় তাকাই আমি যে দিক-পানে॥ আমি তার মুখের কথা শুনব ব'লে গেলাম কোথা, শোনা হল না, হল না-- আজ ফিরে এসে নিজের দেশে এই-যে শুনি শুনি তাহার বাণী আপন গানে॥ কে তোরা খুঁজিস তারে কাঙাল-বেশে দ্বারে দ্বারে, দেখা মেলে না মেলে না,-- ও তোরা আয় রে ধেয়ে দেখ্ রে চেয়ে আমার বুকে -- ওরে দেখ্ রে আমার দুই নয়ানে॥