ওগো, তোমরা সবাই ভালো-- যার অদৃষ্টে যেমনি জুটেছে, সেই আমাদের ভালো-- আমাদের এই আঁধার ঘরে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালো ॥ কেউ বা অতি জ্বলো-জ্বলো, কেউ বা ম্লান' ছলো-ছলো, কেউ বা কিছু দহন করে, কেউ বা স্নিগ্ধ আলো ॥ নূতন প্রেমে নূতন বধূ আগাগোড়া কেবল মধু, পুরাতনে অম্ল-মধুর একটুকু ঝাঁঝালো। বাক্য যখন বিদায় করে চক্ষু এসে পায়ে ধরে, রাগের সঙ্গে অনুরাগে সমান ভাগে ঢালো ॥ আমরা তৃষ্ঞা, তোমরা সুধা-- তোমরা তৃপ্তি, আমরা ক্ষুধা-- তোমার কথা বলতে কবির কথা ফুরালো। যে মূর্তি নয়নে জাগে সবই আমার ভালো লাগে-- কেউ বা দিব্যি গৌরবরন, কেউ বা দিব্যি কালো ॥
অয়ি বিষাদিনী বীণা, আয় সখী, গা লো সেই-সব পুরানো গান— বহুদিনকার লুকানো স্বপনে ভরিয়া দে-না লো আঁধার প্রাণ ।। হা রে হতবিধি, মনে পড়ে তোর সেই একদিন ছিল আমি আর্যলক্ষ্মী এই হিমালয়ে এই বিনোদিনী বীণা করে লয়ে যে গান গেয়েছি সে গান শুনিয়া জগত চমকি উঠিয়াছিল ।। আমি অর্জুনেরে— আমি যুধিষ্ঠিরে করিয়াছি স্তনদান । এই কোলে বসি বাল্মীকি করেছে পুণ্য রামায়ণ গান । আজ অভাগিনী— আজ অনাথিনী ভয়ে ভয়ে ভয়ে লুকায়ে লুকায়ে নীরবে নীরবে কাঁদি, পাছে জননীর রোদন শুনিয়া একটি সন্তান উঠে রে জাগিয়া ! কাঁদিতেও কেহ দেয় না বিধি ।। হায় রে বিধাতা, জানেনা তাহারা সে দিন গিয়াছে চলি যে দিন মুছিতে বিন্দু-অশ্রুধার কত-না করিত সন্তান আমার— কত-না শোণিত দিত রে ঢালি ।।