আজ এই দিনের শেষে সন্ধ্যা যে ওই মানিকখানি পরেছিল চিকন কালো কেশে গেঁথে নিলেম তারে এই তো আমার বিনিসুতার গোপন গলার হারে। চক্রবাকের নিদ্রানীরব বিজন পদ্মাতীরে এই সে সন্ধ্যা ছুঁইয়ে গেল আমার নতশিরে নির্মাল্য তোমার আকাশ হয়ে পার; ওই যে মরি মরি তরঙ্গহীন স্রোতের 'পরে ভাসিয়ে দিল তারার ছায়াতরী; ওই যে সে তার সোনার চেলি দিল মেলি রাতের আঙিনায় ঘুমে অলস কায়; ওই যে শেষে সপ্তঋষির ছায়াপথে কালো ঘোড়ার রথে উড়িয়ে দিয়ে আগুন-ধূলি নিল সে বিদায়; একটি কেবল করুণ পরশ রেখে গেল একটি কবির ভালে; তোমার ওই অনন্ত মাঝে এমন সন্ধ্যা হয় নি কোনোকালে, আর হবে না কভু। এমনি করেই প্রভু এক নিমেষের পত্রপুটে ভরি চিরকালের ধনটি তোমার ক্ষণকালে লও যে নূতন করি।
পথ চেয়ে যে কেটে গেল কত দিনে রাতে। আজ ধুলার আসন ধন্য করে বসবে কি মোর সাথে। রচবে তোমার মুখের ছায়া চোখের জলে মধুর মায়া, নীরব হয়ে তোমার পানে চাইব গো জোড় হাতে। এরা সবাই কী বলে যে লাগে না মন আর, আমার হৃদয় ভেঙে দিল কী মাধুরীর ভার। বাহুর ঘেরে তুমি মোরে রাখবে না কি আড়াল করে, তোমার আঁখি চাইবে না কি আমার বেদনাতে।