তারা দিনের বেলা এসেছিল আমার ঘরে, বলেছিল, একটি পাশে রইব প'ড়ে। বলেছিল, দেবতা সেবায় আমরা হব তোমার সহায়-- যা কিছু পাই প্রসাদ লব পূজার পরে। এমনি করে দরিদ্র ক্ষীণ মলিন বেশে সংকোচেতে একটি কোণে রইল এসে। রাতে দেখি প্রবল হয়ে পশে আমার দেবালয়ে, মলিন হাতে পূজার বলি হরণ করে।
লিখতে যখন বল আমায় তোমার খাতার প্রথম পাতে তখন জানি, কাঁচা কলম নাচবে আজও আমার হাতে,- সেই কলমে আছে মিশে ভাদ্র মাসের কাশের হাসি, সেই কলমে সাঁঝের মেঘে লুকিয়ে বাজে ভোরের বাঁশি। সেই কলমে শিশু দোয়েল শিস দিয়ে তার বেড়ায় উড়ি। পারুলদিদির বাসায় দোলে কনকচাঁপার কচি কুঁড়ি। খেলার পুতুল আজও আছে সেই কলমের খেলাঘরে, সেই কলমে পথ কেটে দেয় পথ-হারানো তেপান্তরে। নতুন চিকন অশথপাতা সেই কলমে আপনি নাচে। সেই কলমে মোর বয়সে তোমার বয়স বাঁধা আছে।
বেহাগ আমি কেবলি স্বপন করেছি বপন বাতাসে-- তাই আকাশকুসুম করিনু চয়ন হতাশে। ছায়ার মতন মিলায় ধরণী, কূল নাহি পায় আশার তরণী, মানসপ্রতিমা ভাসিয়া বেড়ায় আকাশে। কিছু বাঁধা পড়িল না শুধু এ বাসনা- বাঁধনে। কেহ নাহি দিল ধরা শুধু এ সুদূর সাধনে। আপনার মনে বসিয়া একেলা অনলশিখায় কী করিনু খেলা, দিনশেষে দেখি ছাই হল সব হুতাশে! আমি কেবলি স্বপন করেছি বপন বাতাসে।