থাকব না ভাই, থাকব না কেউ-- থাকবে না ভাই কিছু। সেই আনন্দে যাও রে চলে কালের পিছু পিছু। অধিক দিন তো বইতে হয় না শুধু একটি প্রাণ। অনন্ত কাল একই কবি গায় না একই গান। মালা বটে শুকিয়ে মরে-- যে জন মালা পরে সেও তো নয় অমর, তবে দুঃখ কিসের তরে? থাকব না ভাই, থাকব না কেউ-- থাকবে না ভাই কিছু। সেই আনন্দে যাও রে চলে কালের পিছু পিছু। সবই হেথায় একটা কোথাও করতে হয় রে শেষ, গান থামিলে তাই তো কানে থাকে গানের রেশ। কাটল বেলা সাধের খেলা সমাপ্ত হয় ব'লে ভাব্নাটি তার মধুর থাকে আকুল অশ্রুজলে। জীবন অস্ত যায় চলি, তাই রঙটি থাকে লেগে, প্রিয়জনের মনের কোণে শরৎ-সন্ধ্যা-মেঘে। থাকব না ভাই, থাকব না কেউ-- থাকবে না ভাই কিছু। সেই আনন্দে যাও রে ধেয়ে কালের পিছু পিছু। ফুল তুলি তাই তাড়াতাড়ি পাছে ঝ'রেই পড়ে। সুখ নিয়ে তাই কাড়াকাড়ি, পাছে যায় সে স'রে। রক্ত নাচে দ্রুতচ্ছন্দে, চক্ষে তড়িৎ ভায়, চুম্বনেরে কেড়ে নিতে অধর ধেয়ে যায়। সমস্ত প্রাণ জাগে রে তাই, বক্ষ-দোলায় দোলে বাসনাতে ঢেউ উঠে যায় মত্ত আকুল রোলে। থাকব না ভাই, থাকব না কেউ থাকবে না ভাই কিছু। সেই আনন্দে চল্ রে ছুটে কালের পিছু পিছু। কোনো জিনিস চিনব যে রে, প্রথম থেকে শেষ, নেব যে সব বুঝে প'ড়ে-- নাই সে সময় লেশ। জগৎটা যে জীর্ণ মায়া সেটা জানার আগে সকল স্বপ্ন কুড়িয়ে নিয়ে জীবন-রাত্রি ভাগে। ছুটি আছে শুধু দু দিন ভালোবাসবার মতো-- কাজের জন্যে জীবন হলে দীর্ঘজীবন হত। থাকব না ভাই, থাকব না কেউ-- থাকবে না ভাই কিছু। সেই আনন্দে চল্ রে ছুটে কালের পিছু পিছু। আজ তোমাদের যেমন জানছি তেমনি জানতে জানতে ফুরায় যেন সকল জানা-- যাই জীবনের প্রান্তে। এই যে নেশা লাগল চোখে এইটুকু যেই ছোটে অমনি যেন সময় আমার বাকি না রয় মোটে। জ্ঞানের চক্ষু স্বর্গে গিয়ে যায় যদি যাক খুলি, মর্তে যেন না ভেঙে যায় মিথ্যে মায়াগুলি। থাকব না ভাই, থাকব না কেউ থাকবে না ভাই কিছু। সেই আনন্দে চল্ রে ধেয়ে কালের পিছু পিছু।
THOU SHALT dwell in silence in my heart like the full moon in the summer night. Thy sad eyes shall watch over me in my wanderings. The shadow of thy veil shall rest upon my heart Thy breath like the full moon in the summer night shall hover about my dreams, making them fragrant.
আমি যে তোমায় জানি, সে তো কেউ জানে না। তুমি মোর পানে চাও, সে তো কেউ মানে না। মোর মুখে পেলে তোমার আভাস কত জনে কত করে পরিহাস, পাছে সে না পারি সহিতে নানা ছলে তাই ডাকি যে তোমায়-- কেহ কিছু নারে কহিতে। তোমার পথ যে তুমি চিনায়েছ সে কথা বলি নে কাহারে। সবাই ঘুমালে জনহীন রাতে একা আসি তব দুয়ারে। স্তব্ধ তোমার উদার আলয়, বীণাটি বাজাতে মনে করি ভয়, চেয়ে থাকি শুধু নীরবে। চকিতে তোমার ছায়া দেখি যদি ফিরে আসি তব গরবে। প্রভাত না হতে কখন আবার গৃহকোণ-মাঝে আসিয়া বাতায়নে বসি বিহ্বল বীণা বিজনে বাজাই হাসিয়া। পথ দিয়ে যে বা আসে যে বা যায় সহসা থমকি চমকিয়া চায়, মনে করে তারে ডেকেছি-- জানে না তো কেহ কত নাম দিয়ে এক নামখানি ঢেকেছি। ভোরের গোলাপ সে গানে সহসা সাড়া দেয় ফুলকাননে, ভোরের তারাটি সে গানে জাগিয়া চেয়ে দেখে মোর আননে। সব সংসার কাছে আসে ঘিরে, প্রিয়জন সুখে ভাসে আঁখিনীরে, হাসি জেগে ওঠে ভবনে। যে নামে যে ছলে বীণাটি বাজাই সাড়া পাই সারা ভুবনে। নিশীথে নিশীথে বিপুল প্রাসাদে তোমার মহলে মহলে হাজার হাজার সোনার প্রদীপ জ্বলে অচপল অনলে। মোর দীপে জ্বেলে তাহারি আলোক পথ দিয়ে আসি, হাসে কত লোক, দূরে যেতে হয় পালায়ে-- তাই তো শিখা সে ভবনশিখরে পারি নে রাখিতে জ্বালায়ে। বলি নে তো কারে, সকালে বিকালে তোমার পথের মাঝেতে বাঁশি বুকে লয়ে বিনা কাজে আসি বেড়াই ছদ্মসাজেতে। যাহা মুখে আসে গাই সেই গান নানা রাগিণীতে দিয়ে নানা তান, এক গান রাখি গোপনে। নানা মুখপানে আঁখি মেলি চাই, তোমা-পানে চাই স্বপনে।