মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই। এই সূর্যকরে এই পুষ্পিত কাননে জীবন্ত হৃদয়-মাঝে যদি স্থান পাই। ধরায় প্রাণের খেলা চিরতরঙ্গিত, বিরহ মিলন কত হাসি- অশ্রু-ময়, মানবের সুখে দুঃখে গাঁথিয়া সংগীত যদি গো রচিতে পারি অমর-আলয়। তা যদি না পারি তবে বাঁচি যত কাল তোমাদেরি মাঝখানে লভি যেন ঠাঁই, তোমরা তুলিবে বলে সকাল বিকাল নব নব সংগীতের কুসুম ফুটাই। হাসিমুখে নিয়ো ফুল, তার পরে হায় ফেলে দিয়ো ফুল, যদি সে ফুল শুকায়।
কোন্ বাণী মোর জাগল, যাহা রাখবে স্মরণে-- পলে-পলে দলিত সে কালের চরণে। যায় সে কেবল ভেঙে চুরে, ছড়িয়ে পড়ে কাছে দূরে-- জীবনবাণীর অখণ্ড রূপ মিলবে মরণে।
ক্ষণে ক্ষণে পাগল হাওয়ায় ঘূর্ণিধূলিতে প্রাণের দোলে এলোমেলো রয় সে দুলিতে। বৈতরণীর অগাধ নদী পেরিয়ে আবার ফেরে যদি উল্টো স্রোতের সে দান, ডালায় পারবে তুলিতে।
কোন্ বাণী মোর জাগল, যাহা রাখবে স্মরণে, টিঁকবে যাহা নিমেষগুলির পূরণ-হরণে। তারে নিয়ে সারা বেলা চলেছে হার-জিতের খেলা, খেলার শেষে বাঁচল যা তাই বাঁচবে মরণে।