বয়স বিংশতি হবে, শীর্ণ তনু তার বহু বরষের রোগে অস্থিচর্মসার। হেরি তার উদাসীন হাসিহীন মুখ মনে হয় সংসারে লেশমাত্র সুখ পারে না সে কোনোমতে করিতে শোষণ দিয়ে তার সর্বদেহ সর্বপ্রাণমন। স্বল্পপ্রাণ শীর্ণ দীর্ঘ জীর্ণ দেহভার শিশুসম কক্ষে বহি জননী তাহার আশাহীন দৃঢ়ধৈর্য মৌনম্লানমুখে প্রতিদিন লয়ে আসে পথের সম্মুখে। আসে যায় রেলগাড়ি, ধায় লোকজন-- সে চাঞ্চল্যে মুমূর্ষুর অনাসক্ত মন যদি কিছু ফিরে চায় জগতের পানে, এইটুকু আশা ধরি মা তাহারে আনে।
আমার যে আসে কাছে, যে যায় চলে দূরে, কভু পাই বা কভু না পাই যে বন্ধুরে, যেন এই কথাটি বাজে মনের সুরে তুমি আমার কাছে এসেছ। কভু মধুর রসে ভরে হৃদয়খানি, কভু নিঠুর বাজে প্রিয়মুখের বাণী, তবু নিত্য যেন এই কথাটি জানি তুমি স্নেহের হাসি হেসেছ। ওগো কভু সুখের কভু দুখের দোলে মোর জীবন জুড়ে কত তুফান তোলে, যেন চিত্ত আমার এই কথা না ভোলে তুমি আমায় ভালোবেসেছ। যবে মরণ আসে নিশীথে গৃহদ্বারে যবে পরিচিতের কোল হতে সে কাড়ে যেন জানি গো সেই অজানা পারাবারে এক তরীতে তুমিও ভেসেছ।