যে কেবল পালিয়ে বেড়ায়, দৃষ্টি এড়ায়, ডাক দিয়ে যায় ইঙ্গিতে, সে কি আজ দিল ধরা গন্ধে-ভরা বসন্তের এই সঙ্গীতে॥ ও কি তার উত্তরীয় অশোকশাখায় উঠল দুলি। আজ কি পলাশবনে ওই সে বুলায় রঙের তুলি। ও কি তার চরণ পড়ে তালে তালে মল্লিকার ওই ভঙ্গীতে॥ না গো না, দেয় নি ধরা, হাসির ভরা দীর্ঘশ্বাসে যায় ভেসে। মিছে এই হেলা-দোলায় মনকে ভোলায়, ঢেউ দিয়ে যায় স্বপ্নে সে। সে বুঝি লুকিয়ে আসে বিচ্ছেদেরই রিক্ত রাতে, নয়নের আড়ালে তার নিত্য-জাগার আসন পাতে-- ধেয়ানের বর্ণছটায় ব্যথার রঙে মনকে সে রয় রঙ্গিতে॥
কেন যে মন ভোলে আমার মন জানে না। তারে মানা করে কে, আমার মন মানে না ॥ কেউ বোঝে না তারে, সে যে বোঝে না আপ্নারে। সবাই লজ্জা দিয়ে যায়, সে তো কানে আনে না ॥ তার খেয়া গেল পারে, সে যে রইল নদীর ধারে। কাজ ক'রে সব সারা ওই এগিয়ে গেল কারা, আন্মনা মন সে দিক-পানে দৃষ্টি হানে না ॥
বহু যুগের ও পার হতে আষাঢ় এল আমার মনে, কোন্ সে কবির ছন্দ বাজে ঝরো ঝরো বরিষনে॥ যে মিলনের মালাগুলি ধুলায় মিশে হল ধূলি গন্ধ তারি ভেসে আসে আজি সজল সমীরণে॥ সে দিন এমনি মেঘের ঘটা রেবানদীর তীরে, এমনি বারি ঝরেছিল শ্যামলশৈলশিরে। মালবিকা অনিমিখে চেয়ে ছিল পথের দিকে, সেই চাহনি এল ভেসে কালো মেঘের ছায়ার সনে॥