Robert Burns


 

ললিত-নলিনী (lalit nalini)


                  (কৃষকের প্রেমালাপ।)

    ললিত

হা নলিনী গেছে আহা কী সুখের দিন,

দোঁহে যবে এক সাথে, বেড়াতেম হাতে হাতে

নবীন হৃদয় চুরি করিলি নলিন!

হা নলিনী কত সুখে গেছে সেই দিন।

   নলিনী

কত ভালোবাসি সেই বনেরে ললিত,

প্রথমে বলিনু যেথা, মনের লুকানো কথা,

স্বর্গ-সাক্ষী করি যেথা হয়ে হরষিত

বলিলে, আমারি তুমি হইবে ললিত।

             ললিত

বসন্ত-বিহগ যথা সুললিত ভাষী,

যত শুনি তত তার, ভালো লাগে গীতধার,

যত দিন যায় তত তোরে ভালোবাসি,

যত দিন যায় তব বাড়ে রূপরাশি।

             নলিনী

কোমল গোলাপকলি থাকে যথা গাছে,

দিন দিন ফুটে যত, পরিমল বাড়ে তত,

এ হৃদয় ভালোবাসা আলো করি আছে

সঁপেছি সে ভালোবাসা তোমারি গো কাছে।

             ললিত

মৃদুতর রবিকর সুনীল আকাশ

হেরিলে শস্যের আশে, হৃদয় হরষে ভাসে

তার চেয়ে এ হৃদয়ে বাড়ে গো উল্লাস

হেরিলে নলিনী তোর মৃদু মধু হাস।

             নলিনী

মধু আগমন বার্তা করিতে কুজিত

কোকিল যখন ডাকে, হৃদয় নাচিতে থাকে

কিন্তু তার চেয়ে হৃদি হয় উথলিত,

মিলিলে তোমার সাথে প্রাণের ললিত।

             ললিত

কুসুমের মধুময় অধর যখন

ভ্রমর প্রনয়ভরে, হরষে চুম্বন করে

সে কি এত সুখ পায় আমার মতন

যবে ও অধরখানি করি গো চুম্বন?

             নলিনী

শিশিরাক্ত পত্রকোলে মল্লিকা হসিত,

বিজন সন্ধ্যার ছায়ে, ফুটে সে মলয়বায়ে,

সে অমন নহে মিষ্ট নহে সুবাসিত

তোমার চুম্বন আহা যেমন ললিত।

             ললিত

ঘুরুক অদৃষ্টচক্র সুখ দুখ দিয়া

কভু দিক্‌ রসাতলে, কভু বা স্বরগে তুলে

রহিবে একটি চিন্তা হৃদয়ে জাগিয়া

সে চিন্তা তোমারি তরে জানি ওগো প্রিয়া।

             নলিনী

ধন রত্ন কনকের নাহি ধার ধারি

পদতলে বিলাসীর, নত করিব না শির

প্রণয়ধনের আমি দরিদ্র ভিখারি,

সে প্রণয়, ললিত গো তোমারি তোমারি।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •