শান্তিনিকেতন, ৩ আষাঢ়, ১৩৩৯


 

বধূ (bodhu)


শ্রীমতী অমিতা সেনের পরিণয় উপলক্ষে

মানুষের ইতিহাসে ফেনোচ্ছল উদ্‌বেল উদ্যম

গর্জি উঠে; অতীত তিমিরগর্ভ হতে তুরঙ্গম

তরঙ্গ ছুটিছে শূন্যে ; উন্মেষিছে মহাভবিষ্যৎ।

বর্তমান কালতটে অগ্নিগর্ভ অপূর্ব পর্বত

সদ্যোজাত মহিমায় উড়ায় উজ্জ্বল উত্তরীয়

নব সূর্যোদয়-পানে। যে-অদৃষ্ট, যে-অভাবনীয়

মানুষের ভাগ্যলিপি লিখিতেছে অজ্ঞাত অক্ষরে

দৃপ্ত বীরমূর্তি ধরি, দেখিয়াছি; তার কণ্ঠস্বরে

শুনেছি দীপকরাগে সৃষ্টিবাণী মরণবিজয়ী

প্রাণমন্ত্রে।

           এই ক্ষুব্ধ যুগান্তর-মাঝে বৎসে অয়ি,

তোমারে হেরিনু বধূবেশে, নির্ঝরিণী নৃত্যশীলা,

সহসা মিলিছ সরোবরে, চটুল চঞ্চল লীলা

গভীরে করিছ মগ্ন; নির্ভয়ে নিখিল করি পণ

নবজীবনের সৃষ্টি-রহস্য করিছ উন্মোচন।

ইতিহাসবিধাতার ইন্দ্রজাল বিশ্বদুঃখসুখে

দেশে দেশে যে-বিস্ময় বিস্তারিছে বিরাট কৌতুকে

যুগে যুগে, নরনারীহৃদয়ের আকাশে আকাশে

এও সেই সৃষ্টিলীলা জ্যোতির্ময় বিশ্ব-ইতিহাসে।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •